স্ত্রীর নাম রিয়া।আমি মুসলিম কিন্তু ও হিন্দু।আমরা ভালোবেসে বিয়ে করেছি।তাই সনাতন ধর্ম ও তার পরিবার ছেড়ে আমার কাছে চলে এসেছে।
পারফিউমের গন্ধে পারফিউম |
পেলাম।দৌড়ে রুমে গিয়ে দেখি রিয়া হাপাচ্ছে।বিস্ফোরিত দুই চোখ।রুমের ঠিক মাঝ জায়গা বরাবর ওর চোখ দুটি আটকে গেছে।আমতা আমতা করে আমাকে বলল-
-নাহিদ।সে-সে-সেই পারফিউম।
-কি বলছ রিয়া? কোথায় পারফিউম? পারফিউমের গন্ধে পারফিউম
-তুমি দেখো,ঐ জায়গায় সেই স্নেলটা।
অদ্ভুত সেই গন্ধটা।
(ইশারায় মাঝের দিকে দেখাল)
-কই? আমিতো পাচ্ছিনা।
-তু-তু-তুমি ঐখানে গিয়ে দেখ।
-পাগলামি করোনা রিয়া।মানুষ কি বলবে!
-তুমি আমার কথা বিশ্বাস কর নাহিদ।
ওখানে গিয়ে দেখ।প্লিজজজ
রিয়ার কথা শুনে ঐ জায়গায় গিয়ে
দাড়াতেই অসম্ভব মিষ্টি একটা
গন্ধ পেলাম।একদম দামি ব্র্যান্ডের
পারফিউম।একটু নড়েচড়ে
উৎসটা খোঁজার চেষ্টা করলাম।কিন্তু ঐ
জায়গায় একটু নড়তেই
গন্ধটা আর পাচ্ছিনা।আশ্চর্য ব্যাপার! ঐ
জায়গা থেকে
ডানে,বামে চারিদিকে নড়ে
দেখলাম।কিন্তু নাহ,গন্ধ শুধু ঐ
জায়গাটা জুড়েই।নিজের নাককে
বিশ্বাস করতে পারছিনা।রিয়ার
দিকে তাকিয়ে দেখি এতক্ষণে বেশ
স্বাভাবিক হয়ে
এসেছে ও।আমার দিকে আকুতি চাহনি
দিয়ে আছে।
হঠাৎ কি ভেবে দৌড়ে গেলাম বাবা
মাকে ডাকতে।উনাদের ডেকে এনে ঐ জায়গার পাশে দাড় করিয়ে জিজ্ঞেস করলাম- -বাবা,মা,তোমরা কি কোন গন্ধ পাচ্ছ? জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে দুজনেই বলল-
-কই? না তো।
আমি আর রিয়া চোখাচোখি হলাম।ওর চোখেও বিস্ময়ের চিহ্ন। বাবা মাকে ঐ জায়গায় দাড় করিয়ে বললাম- -এখন পাচ্ছো? একটু থেমে বাবা বলল-
-হ্যাঁ।মিষ্টি একটা গন্ধ পাচ্ছি।
বুঝতে পারলাম রহস্য একটা আছেই।
ভাড়াটে কিংবা আমরা কেউই এই পারফিউম ব্যবহার করিনা।তাহলে এটা আসলো কোথা থেকে!!! এটাতো বিয়ের আগে ছিলনা।বেশ চিন্তায় পড়লাম।
ব্যাপারটা সুরাহা করতে রিয়াকে
জিজ্ঞেস করলাম-
-আচ্ছা রিয়া,তোমার জীবনে কি এই
পারফিউমের সাথে
কোন সম্পর্ক আছে? I mean তুমি এই গন্ধটার
সাথে কি পরিচিত?
রিয়া গভীরভাবে চিন্তা করে বলল-
-হ্যাঁ নাহিদ।এই ব্র্যান্ডের পারফিউম শুধুমাত্র আমার বাবা ব্যবহার করতো।এই একটা ব্র্যান্ড ছাড়া বাবা কখনও অন্য ব্র্যান্ড ইউজ করেনি।কিন্তু বাবা তো মারা গেছেন সেই ৭ বছর আগে। তাহলে এটা এখন এখানে কিভাবে আসবে???
আমি বাবা মায়ের দিকে একটু তাকালাম।উনারাও তাকালো।আমরা সব বুঝতে পেরেছি। আমি হঠাৎ বলে উঠলাম-
-আরে ধুর,এটা কোন ব্যাপার নাহ।কোন কারণে হয়তো এমনটা হচ্ছে।(রিয়াকে বিষয়টা বুঝতে দেয়া যাবেনা,তাই মিথ্যা বললাম)
আমি আর বাবা-মা চোখাচোখিতে এটাই বুঝলাম যে, রিয়া ওদের পরিবারের সবচেয়ে ছোট মেয়ে ছিল।
স্বাভাবিকভাবেই বাবার আদরের দুলালি রিয়া।কিন্তু এত আদরের মেয়ে আমার কারণে পরিবার থেকে সেপারিট হয়ে যাওয়ায় ওর বাবা তা সহ্য করতে পারেনি।তাই মেয়েকে দেখতে এই নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ে রিয়ার বাবা আসে।সাথে রিয়া আর ওর বাবার সম্পর্কজড়ানো সেই চিরচেনা পারফিউমের গন্ধটাও। বাবাদের ভালোবাসা আসলেই অতুলনীয়। আমরা এখন আর পারফিউম রহস্যে ভয় পায়না।রিয়াকে সব খুলেই বলেছি।কিন্তু একটু অন্যভাবে
0 comments:
Post a Comment